Share:
Media
July 2025
টেকসই নগর গঠনে এগিয়ে শেল্টেক্
বিশ্বজুড়ে শহরগুলো যে গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে, তাতে পরিবেশ এবং মানুষের ভারসাম্য নিশ্চিত করা দিনকে দিন আরও কঠিন হয়ে উঠছে। জাতিসংঘের ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ১১ নম্বর লক্ষ্য হলো “সাসটেইনেবল সিটিস এন্ড কমিউনিটিস”, অর্থাৎ আমাদের এমন শহর গড়ে তুলতে হবে, যা হবে সবার জন্য নিরাপদ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই। এ ভাবনাকে সামনে রেখে শেল্টেক্ তাদের প্রতিটি প্রকল্পে সচেতনভাবে টেকসই উন্ন্যয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে কাজ করে চলেছে। দ্রুত নগরায়নের এই সময়ে পরিবেশবান্ধব নির্মাণ, সামাজিক সম্প্রীতি এবং ভবিষ্যৎকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্প পরিকল্পনা করে চলেছে শেল্টেক্।
১৯৮৮ সালে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের গুণগত নির্মাণ, সময়মতো হস্তান্তর এবং গ্রাহকসেবার জন্য বহুল প্রশংসিত। দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় আবাসন প্রতিষ্ঠান শেল্টেক্ (প্রা.) লিমিটেড ‘সেরা টেকসই রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ২০২৫’ ক্যাটাগরিতে ‘এসডিজি ব্র্যান্ড চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অর্জন করেছে। সাস্টেইনেবল ব্র্যান্ড ইনিশিয়েটিভ, বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম ও বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের এই আয়োজনে বিভিন্ন খাতের ৩৫টি প্রতিষ্ঠান বিজয়ী হিসেবে নির্বাচিত হয়। শেল্টেক্ একমাত্র রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান, যারা এই ক্যাটাগরিতে মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি অর্জন করেছে। আজকের লেখায় আমরা জানবো, টেকসই নগর গঠনে কীভাবে শেল্টেক্ কাজ করে চলেছে।
ডিজাইনে টেকসই ভাবনা
গত ৩৭ বছরে শেল্টেক্ ঢাকায় ৪,১৪৫টিরও বেশি আবাসিক ও বাণিজ্যিক ইউনিট হস্তান্তর করেছে। শেল্টেকে্র টেকসই নগর নির্মাণের প্রচেষ্টা নজর কাড়ে ডিজাইনে। প্রতিটি প্রকল্পে দেখা যায় খোলা জায়গা, ছাদবাগান, হাঁটার পথ ও বিশ্রাম নেয়ার জায়গা রয়েছে। পরিকল্পিত ছাদবাগান শহরের তাপমাত্রা কমায়, বাতাস বিশুদ্ধ রাখে এবং মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। খোলা জায়গাগুলো ছোটদের খেলার জন্য যেমন প্রয়োজন, তেমনি বড়দের হেঁটে বেড়ানো বা একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা হিসেবেও কাজ করে। শেল্টেক্- এর প্রতিটি অ্যাপার্টমেন্ট এমনভাবে ডিজাইন করা হয়, যাতে দিনের অধিকাংশ সময় প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস যাওয়া-আসা করতে পারে; যাতে করে কৃত্রিম আলো বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবহার কমানো যায়।
পরিবেশ সুরক্ষায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার
শেল্টেক্ প্রকল্পগুলোতে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার, রেইনওয়াটার হারভেস্টিং এর মতন প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত হচ্ছে। সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় এবং কার্বন নিঃসরণ কমে; যা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। শেল্টেক্ এর প্রকল্পে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে তা দিয়ে গাড়ি ধোয়া, গাছে পানি দেওয়াসহ নানা কাজে ব্যবহার করে পানির অপচয় কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।
সর্বজনীন প্রবেশযোগ্যতা
শেল্টেক্ বিশ্বাস করে, সকলকে নিয়ে একসাথে বসবাস করাতেই আনন্দ। এই ভাবনা থেকেই প্রতিটি প্রকল্পের প্রবেশপথে রাখা হয় র্যাম্প, প্রশস্ত চলার পথ, হুইলচেয়ারে ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষ র্যাম্পযুক্ত ওয়াশরুম, প্রশস্ত লিফট, সেফটি বার এবং দিকনির্দেশনার জন্য ভিজ্যুয়াল সাইনেজ। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের জন্য এইসব সুযোগ-সুবিধা রিয়েল এস্টেট খাতে অনন্য নজির সৃষ্টি করছে।
কমিউনিটি বিল্ড-আপ
শেল্টেক্- এর প্রকল্পগুলো এমনভাবে পরিকল্পনা করা হয় যেন সকলে মিলে একটি অন্তরভুক্তিমূলক কমিউনিটির আবহ তৈরি হয়। মাল্টিপারপাস কমিউনিটি রুম, নামাজের জায়গা, শিশুদের খেলার যায়গা, বারবিকিউ স্পেস ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা থাকার কারণে শেল্টেক্ বাসিন্দাদের মাঝে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
শেল্টেক্ প্রত্যাশা
টেকসই নগর নির্মাণের ধারায় ঢাকার নতুন সংযোজন হতে চলেছে শেল্টেক্ প্রত্যাশা। প্রকল্পটির নকশা করেছেন দেশের খ্যাতনামা স্থপতি নাহাস খলিল। ধানমন্ডিতে নির্মাণাধীন এই প্রকল্পে থাকছে ছাদবাগান, সৌরবিদ্যুৎ, সবুজ খোলা স্থান, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা, মাল্টিলেভেল পার্কিং সুবিধা, এবং সর্বজনীন প্রবেশযোগ্যতা। প্রকল্পটির নকশায় বিশেষভাবে সবুজকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এখানে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি সচেতন, মানবিক ও পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ ঠিকানা।
শেল্টেক্ বরাবরই বিশ্বাস করে, রিয়েল এস্টেট মানে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল নির্মাণ। আর তাই সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল নির্মাণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন এবং পরিবেশের প্রতি সম্মান এই তিনটি দিকে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে আসছে শেল্টেক্। যার স্বীকৃতিস্বরূপ শেল্টেক্ অর্জন করেছে ‘সেরা টেকসই রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ২০২৫’- পুরস্কার। এই অর্জন আরও টেকশই নগর গঠনে শেল্টেক্-কে এগিয়ে নিয়ে যাবে।